জমি কেনার আগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভালোভাবে দেখা ও যাচাই করা জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে কোনো আইনি বা আর্থিক জটিলতায় না পড়েন। নিচে ধাপে ধাপে সবগুলো বিষয় দেওয়া হলো:
✅ ১. জমির দলিলপত্র ও কাগজ যাচাই:
- হাল দাখিলা/খারিজ (Mutation) কপি: প্রমাণ করে জমির বর্তমান মালিক কে।
- খতিয়ান (Record of Rights): জমির মালিকানা ও পরিমাপ সম্পর্কে সরকারি নথি।
- দাগ নম্বর ও খতিয়ান নম্বর: জমির নির্দিষ্ট অবস্থান শনাক্ত করতে কাজে লাগে।
- সেটেলমেন্ট রেকর্ড (CS, SA, RS খতিয়ান): ইতিহাসভিত্তিক মালিকানা যাচাইয়ের জন্য।
- দলিল (Title Deed): জমির মালিকানা প্রমাণ করে। সাবরেজিস্ট্রি অফিসে যাচাই করা দরকার।
✅ ২. মালিকানা যাচাই:
- জমির বিক্রেতা আসল মালিক কিনা তা যাচাই করুন।
- ওয়ারিশদের সম্মতি: জমি যদি পৈতৃক হয়, তবে সব উত্তরাধিকারীর সম্মতি প্রয়োজন।
✅ ৩. জমির শ্রেণি ও ব্যবহার:
- জমিটি আবাসিক, বাণিজ্যিক নাকি কৃষি জমি—তা যাচাই করুন।
- কৃষি জমি কিনে আবাসিক প্রকল্প করলে জমি পরিবর্তনের অনুমতি (Land Conversion) নিতে হয়।
✅ ৪. জমির পরিমাপ ও সীমা নির্ধারণ:
- সরকার অনুমোদিত সার্ভেয়ার দিয়ে জমির মাপজোক করান।
- সীমানা নির্ধারণ/পিলার স্থাপন গুরুত্বপূর্ণ।
✅ ৫. রাস্তা ও প্রবেশ পথ:
- জমির উপযুক্ত রাস্তাঘাট আছে কিনা তা নিশ্চিত হন। অনেক জমি “ল্যান্ড লকড” থাকে—অর্থাৎ প্রবেশপথ থাকে না।
✅ ৬. মামলা-মোকদ্দমা আছে কিনা:
- জমি কোনো মামলার আওতাভুক্ত (Lis Pendens) কিনা তা যাচাই করুন।
- আদালতে বা ভূমি অফিসে অনুসন্ধান করুন।
✅ ৭. ভূমি কর ও ইউটিলিটি:
- জমির উপর ভূমি কর (Land Tax) পরিশোধিত কিনা তা দেখুন।
- পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সংযোগ পাওয়া যাবে কিনা জেনে নিন।
✅ ৮. এনওসি (No Objection Certificate):
- প্রয়োজনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা থেকে এনওসি সংগ্রহ করুন।
✅ ৯. বিক্রয় চুক্তি (Baina) ও রেজিস্ট্রি:
- জমি কেনার আগে বায়না চুক্তি করুন।
- আইনজীবীর মাধ্যমে স্ট্যাম্পে চুক্তি ও পরবর্তীতে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করুন।
✅ ১০. রিয়েল এস্টেট/দালালদের সতর্কতা:
- যাচাই না করে দালাল বা বিক্রেতার মুখের কথায় জমি কিনবেন না।
- সব নথি আইনি উপদেষ্টার মাধ্যমে পরীক্ষা করান।
🔎 পরামর্শ:
জমি কেনার আগে একজন দক্ষ ভূমি আইনজীবীর সহায়তা নিন। নিজে যাচাই করুন অথবা নথিপত্র যাচাই করে দিন আইনজীবী বা সার্ভেয়ারকে।
No comments:
Post a Comment